বিজ্ঞান সম্পর্কে পোপ দ্বিতীয় জন পল

বিজ্ঞান সম্পর্কে পোপ দ্বিতীয় জন পল

“কুসংস্কার ও ভুল থেকে ধর্মকে উদ্ধার করতে পারে বিজ্ঞান। আর ধর্ম বিজ্ঞানকে মুক্ত করতে পারে পৌত্তলিকতা ও মিথ্যা সত্য থেকে।”

— পোপ দ্বিতীয় জন পল

উদ্ধৃতির উৎস :

ভ্যাটিকান অবজারভেটরির ডিরেক্টর, ফাদার জর্জ ভি. কোয়েনের কাছে লেখা চিঠি (১ জুন ১৯৮৮)। vatican.va ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত।

পোপ দ্বিতীয় জন পল ১৯৮৮ সালের ১ জুন ফাদার জর্জ ভি. কোয়েনকে (যিনি ভ্যাটিকান অবজারভেটরির প্রাক্তন পরিচালক) লিখেছিলেন, “বিজ্ঞান ভুল এবং কুসংস্কার থেকে ধর্মকে মুক্ত করতে পারে; ধর্ম বিজ্ঞানকে মূর্তিপূজা এবং মিথ্যা সত্য থেকে মুক্ত করতে পারে। প্রত্যেকে একে অপরকে একটি বিস্তৃত জগতে প্রতিষ্ঠা করতে পারে, এমন একটি বিশ্ব যেখানে উভয়ই উন্নতি করতে পারে।"

বিজ্ঞান সম্পর্কে দ্বিতীয় জন পল’এর আরও কিছু উদ্ধৃতি:

১) ধর্ম ও বিজ্ঞানের মধ্যে পার্থক্য :

“ধর্ম এবং বিজ্ঞান উভয়কেই তাদের স্বাতন্ত্র্য এবং তাদের  অসাধারণত্ব রক্ষা করতে হবে। ধর্ম বিজ্ঞানের উপর প্রতিষ্ঠিত নয় বা বিজ্ঞান ধর্মের সম্প্রসারণ নয়। প্রত্যেকের নিজস্ব নীতি, পদ্ধতির ধরণ, ব্যাখ্যার বৈচিত্র্য এবং নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার থাকা উচিত।”
— পোপ দ্বিতীয় জন পল,
ভ্যাটিকান অবজারভেটরির ডিরেক্টর, ফাদার জর্জ ভি. কোয়েনের কাছে লেখা চিঠি (১ জুন ১৯৮৮)। 
vatican.va ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত

২) ধর্ম ও বিজ্ঞানের ন্যায্যতা সম্পর্কে :

“খ্রিস্টধর্ম নিজের মধ্যেই তার ন্যায্যতার মানদণ্ড তৈরি করে এবং বিজ্ঞান তার প্রাথমিক দোষ বা ব্যর্থতার দায়ে ক্ষমা প্রার্থী হবে এ প্রত্যাশা তৈরি করে না। বিজ্ঞানকে তার নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে।"

“Christianity possesses the source of its justification within itself and does not expect science to constitute its primary apologetic. Science must bear witness to its own worth.”

— পোপ দ্বিতীয় জন পল,
ভ্যাটিকান অবজারভেটরির ডিরেক্টর, ফাদার জর্জ ভি. কোয়েনের কাছে লেখা চিঠি (১ জুন ১৯৮৮)। 
vatican.va ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত

৩) ধর্ম ও বিজ্ঞানের মধ্যে সম্পর্ক :

প্রতিটি বিজ্ঞানী, ব্যক্তিগত অধ্যয়ন এবং গবেষণার মাধ্যমে, নিজেকে এবং নিজের মধ্যে থাকা মানবতাকে সম্পূর্ণ করেন। ... বৈজ্ঞানিক-গবেষণা নিজের জন্য করা হয় যেমন, তেমনি অন্যের জন্যেও, সত্যের সাথে ব্যক্তিগত সাক্ষাতের পথ এবং সম্ভবত স্বর্গ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বরের সাথে সাক্ষাতের জন্য বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত জায়গা এটা। বিজ্ঞান তার সমস্ত মূল্যে আমাদের অস্তিত্বকে অনুপ্রাণিত করতে সক্ষম, সত্যের স্বাধীনতার একটি মহান অভিজ্ঞতা হিসাবে, সেবার একটি মৌলিক কাজ হিসাবে উজ্জ্বল করে। গবেষণার মাধ্যমে প্রতিটি বিজ্ঞানী একজন মানুষ হিসেবে বেড়ে ওঠেন এবং অন্যদেরও একইভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করেন।

Every scientist, through personal study and research, completes himself and his own humanity. ... Scientific research constitutes for you, as it does for many, the way for the personal encounter with truth, and perhaps the privileged place for the encounter itself with God, the Creator of heaven and earth. Science shines forth in all its value as a good capable of motivating our existence, as a great experience of freedom for truth, as a fundamental work of service. Through research each scientist grows as a human being and helps others to do likewise.

— পোপ দ্বিতীয় জন পল
পন্টিফিকাল একাডেমি অফ সায়েন্সেসের সদস্যদের উদ্দেশ্যে ভাষণ (১৩ নভেম্বর ২০০০)। L'Osservatore Romano-তে (২৯ নভেম্বর ২০০০), ইংরেজি সংস্করণে অনূদিত,

পরিবেশ বিজ্ঞান সম্পর্কে :

পরিবেশের ব্যাপক ধ্বংসের মুখোমুখি হয়ে, সর্বত্র মানুষ বুঝতে পারছে যে আমরা অতীতের মতো করে পৃথিবীর পণ্যগুলো ব্যবহার করা চালিয়ে যেতে পারি না ... একটি নতুন পরিবেশগত সচেতনতা উদ্ভূত হতে শুরু করেছে, যা হ্রাস পাওয়ার পরিবর্তে, কংক্রিট প্রোগ্রাম এবং উদ্যোগের মাধ্যমে বিকাশ করতে উৎসাহিত করছে। (৮ ডিসেম্বর ১৯৮৯)

Faced with the widespread destruction of the environment, people everywhere are coming to understand that we cannot continue to use the goods of the earth as we have in the past … A new ecological awareness is beginning to emerge which rather than being downplayed, ought to be encouraged to develop into concrete programs and initiatives. (8 Dec 1989)

— পোপ দ্বিতীয় জন পল
পরিবেশগত সংকট: একটি সাধারণ দায়িত্ব। আল গোরে উদ্ধৃত, আর্থ ইন দ্য ব্যালেন্স: ইকোলজি অ্যান্ড দ্য হিউম্যান স্পিরিট (২০০০), ২৬২।

বিজ্ঞান গবেষণা ও ধর্মতত্ত্বের সম্পর্ক :

বিজ্ঞান সর্বোত্তম ভাবে বিকশিত হয় তখন, যখন এর ধারণা এবং সিদ্ধান্তগুলো বৃহত্তর মানব সংস্কৃতির সাথে একীভূত হয় এবং চূড়ান্ত অর্থ এবং মূল্যবোধ নিয়ে আলোচনা করে। তাই বিজ্ঞানীরা দার্শনিক এবং ধর্ম-তাত্ত্বিকদের দ্বারা আলোচিত বিষয়গুলি থেকে  নিজেদেরকে সম্পূর্ণরূপে দূরে রাখতে পারেন না। বিজ্ঞান গবেষণার জন্য তাঁরা তাঁদের শক্তি এবং যত্ন এই এসব বিষয়গুলিতেই নিবেদন করে, যাতে তাঁদের আবিষ্কারের মানবিক সম্ভাবনাগুলো আরও পরিপূর্ণভাবে অন্যদের উপলব্ধিতে সহায়তা করতে পারে। সেই সঙ্গে যাতে তাঁরা নিজেরা এটাও উপলব্ধি করতে পারে যে, এই আবিষ্কারগুলো সত্যিকারের কোন চূড়ান্ত জ্ঞানের জন্য প্রকৃত বিকল্প হতে পারে না।

Science develops best when its concepts and conclusions are integrated into the broader human culture and its concerns for ultimate meaning and value. Scientists cannot, therefore, hold themselves entirely aloof from the sorts of issues dealt with by philosophers and theologians. By devoting to these issues something of the energy and care they give to their research in science, they can help others realize more fully the human potentialities of their discoveries. They can also come to appreciate for themselves that these discoveries cannot be a genuine substitute for knowledge of the truly ultimate.
— পোপ দ্বিতীয় জন পল,
ভ্যাটিকান অবজারভেটরির ডিরেক্টর, ফাদার জর্জ ভি. কোয়েনের কাছে লেখা চিঠি (১ জুন ১৯৮৮)। 
vatican.va ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত

মন্তব্যসমূহ

আরও দেখুন : 👉 বরণীয় মানুষের স্মরণীয় কথা

আর্থার শোপেনহাওয়ার আলী হোসেন আলেকজান্ডার ইয়াসের আরাফাত ইয়েভগেনি ইয়েভতুশেঙ্কো ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর উইনস্টন চার্চিল উইলিয়াম শেক্সপিয়ার এ পি জে আবদুল কালাম এডওয়ার্ড স্নোডেন এপিজে আবদুল কালাম এম এস স্বামীনাথন কনফুসিয়াস কার্ট ভনেগাট কার্ল মার্কস গুন্টার গ্রাস গোবিন্দ পানসারে গৌতম বুদ্ধ গ্রেটা থুনবার্গ জর্জ অরওয়েল জ্যোতিরাও ফুলে ড. মহাম্মদ ইউনুস ড. মায়া অ্যাঞ্জেলু নরেন্দ্র মোদী নাইজেল ফারাজে নাওমি উলল্ফ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু নেলসন ম্যান্ডেলা পাবলো ক্যাসালস পিথাগোরাস পূর্ণদাস বাউল পেট্রা নেমকোভা পোপ দ্বিতীয় জন পল প্রণব মুখোপাধ্যায় প্লেটো বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বব ডিলান বব মার্লে বার্ট্রান্ড রাসেল বি আর আম্বেদকর বিমান বসুর মন্তব্য বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বেনিত্তো মুসলিনি ভিক্টর হুগো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহাত্মা গান্ধী মহাবীর মাও সে তুং মাওলানা জালালউদ্দিন রুমি মাওলানা ভাসানী মার্ক টোয়েন মার্গারেটর থ্যাচার মিশেল ফুকো মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ মোহাম্মদ আলী ম্যালকম এক্স যদুনাথ সরকার রঘুরাম রাজন রণজিৎ গুহ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাজীব গান্ধী রুপি কাউর রোজা পার্কস লিও তলস্তয় লুপিতা নিইয়ং’ও লেনার্ড বার্নস্টাইন শিবাজী শুভেন্দু অধিকারী শ্রীকৃষ্ণ শ্রীশ্রীআনন্দমূর্তি সক্রেটিস সান ইয়াত সেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় স্টিফেন হকিং স্বামী বিবেকানন্দ স্লাভোজ জিজেক হওয়ার্ড জিন হজরত আলী হজরত মুহাম্মদ হযরত মুহাম্মদ হাইপেশিয়া হিটলার হিপোক্রেটিস হেলেন কেলার
আরও দেখান

আরও দেখুন : 👉 গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্মরণীয় উক্তি

আইনজীবী আধ্যাত্বিক জীবন আমেরিকার ইতিহাস ইসরাইল ইসলাম ঈশ্বর উকিল উদারপন্থী উন্নয়ন উপকথা উপনিষদ একনায়কতন্ত্র ওষুধ ঔদ্ধত্য ঔপনিবেশিকতা কমিউনিজম কর্ম কুসংস্কার কৃষি ব্যবস্থার সমস্যা কৃষিকাজ ক্যারিশমা ক্রিয়াবাদের মূলনীতি ক্ষুধা গণতন্ত্র গণহত্যা গবেষণা গীতা চাকরি চিকিৎসা চিনা প্রবাদ চেতনা ছাত্র যুব জঙ্গল জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব জলবায়ু জাতপাত জাতীয় আয় জাতীয় সুরক্ষা এজেন্সি জৈন ধর্ম জ্ঞান চর্চা ঝুঁকি ডাক্তার দায়িত্ব দারিদ্র দাসত্ব দুঃখ দেশ ও ধর্ম দেশদ্রোহী দেশপ্রেম ধনতন্ত্র ধর্ম ধর্ম ও উদারতা ধর্মগুরু ধর্মরাষ্ট্র ধর্মীয় নিপীড়ন ধার্মিক ধৈর্যশীলতা নতুন প্রজন্ম নামকরণ নারী নারী অধিকার নারী আন্দোলন নিয়ম নৈরাজ্য ন্যায় পরিবর্তন পুঁজি পুঁজিপতি পুরুষ পূজা পৌরাণিক কাহিনি প্যালেস্টাইন প্রতিকৃতি প্রযুক্তি প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রেম ফ্যাসিবাদ বজ্রপাত বড় বিষয় বাঙালি বিচার বিভাগের ভুল বিচারব্যবস্থা বিজ্ঞান বিজ্ঞান চেতনা বিপ্লব বিশ্বাস বুদ্ধি বুদ্ধিমান মানুষ ব্রাহ্মণ ভয় ভালো থাকা ভালো নাগরিক ভালোবাসা ভাষা মনুষ্যত্ব মনের ব্যথা মন্দির মহান আত্মা মানবধিকার মানবসম্পদ মানুষ হত্যা মারাঠা মিথ্যা মুক্তির উপায় মেয়েদের ক্ষমতা যুক্তি যুদ্ধ রাজনীতি রাজনীতিবিদ রাষ্ট্র রাষ্ট্রপতি লেখক শান্তি শিক্ষক শিক্ষা শিক্ষাল্পতা শিখ-বিরোধী দাঙ্গা শিশু শুদ্ধ ও সঠিক চিন্তা শোষক শ্রমের শ্রীলঙ্কা সংখ্যালঘু সংবিধান সংস্কার সততা ও শিক্ষা সত্য সন্ন্যাসী সমাজ সম্প্রদায়িকতা সম্মান সাফল্য সাহস সাহিত্যিক সুখ সুন্দরতম জিনিস সুশাসন স্বপ্ন স্বাধীনতা স্বাধীনতা সম্পর্কিত হিংসা হিন্দু মুসলমান সম্পর্ক হিন্দু শাস্ত্র হিন্দুত্ব
আরও দেখান

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ