ক্রিয়াবাদের মূলনীতি
ক্রিয়াবাদের মূলনীতি
মহাবীরের ক্রিয়াবাদের মূলনীতি এইরূপ: স্বকৃত কর্মের দ্বারাই মানবের দুঃখোদ্ভব হয়। এই দুঃখের অন্য কোন কারণ নাই। সুখ ও দুঃখ মানবের কর্মফল। মানুষ একাকী জন্মে, একাকী মরে, একাকী উঠে, একাকী পড়ে। তাহার চেতনা, ধারণা, রাগ, বুদ্ধি, অনুভূতি, সমস্তই ব্যক্তিগত। আত্মীয়তার বন্ধন তাহাকে রক্ষা করিতে পারে না। সমস্ত প্রাণীই স্বকৃত কর্মের জন্য বর্তমান অবস্থা প্রাপ্ত হইয়াছে। ইহারা জন্ম, জরা ও মৃত্যুর অধীন। পাপীরা নূতন কৰ্ম্ম সঞ্চয় করিয়া কর্ম্মের ধ্বংস করিতে পারে না। ধার্মিকেরা কর্ম হইতে বিরত হইয়া কর্মের বিলোপ সাধন করে। প্রীতিকর বস্তু প্রীতিকর বস্তু হইতে উৎপন্ন হয় না। যে ব্যক্তি কোন প্রাণীকে হত্যা করিবার ইচ্ছা করে কিন্তু স্বয়ং তাহা করে না, এবং যে ব্যক্তি কোন প্রাণীকে অজ্ঞতাবশতঃ হত্যা করে, ইহারা উভয়েই ঈষৎ দোষে দুষ্ট হইবে।যে ব্যক্তি নিজেকে এবং জগৎকে জানে, যে প্রাণীরা কোথায় যায় এবং কোথা হইতে আর ফিরে না জানে, যে কি স্থায়ী এবং কি অস্থায়ী জানে, যে জন্ম, মৃত্যু এবং মানবের ভবিষ্যৎ জানে, যে নরকবাসীদের যন্ত্রণা জানে, যে পাপের প্রবাহ এবং ইহার বিরতি জানে, যে দুঃখ এবং ইহার ধ্বসে জানে, সেই ক্রিয়াবাদ প্রচার করিবার যোগ্য। ক্রিয়াবাদ বলিতে আত্মা ও কর্ম্মের পদ্ধতি বুঝায়। যে সকল কাজ (ইচ্ছাকৃত অথবা অনিচ্ছাকৃত) আত্মার উপর ক্রিয়া করে তাহাই কৰ্ম্ম।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন