হযরত মুহাম্মদ সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দের উক্তি
হযরত মুহাম্মদ সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দের উক্তি
হযরত মুহাম্মদ সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দের উক্তি |
“তিনি (হজরত মহম্মদ) যুদ্ধ করিতে লাগিলেন, এবং সমগ্র আরবজাতি ঐক্যবদ্ধ হইল। আল্লার নামে মহম্মদের ধর্ম জগৎ প্লাবিত করিল। কী প্রচন্ড বিজয়ী শক্তি!...”
স্বামী বিবেকানন্দ
উৎস ও প্রসঙ্গ :
— মহম্মদ : স্যান ফ্রান্সিস্কো বে-অঞ্চলে ১৯০০ খৃঃ ২৬শে মার্চ প্রদত্ত বক্তৃতার সংক্ষিপ্ত অনুলিপির অনুবাদ।
“এই প্রাচীন মহাপুরুষেরা (হযরত মুহাম্মদ, যীশু খ্রীষ্ট) সকলেই ছিলেন ঈশ্বরের দূত। আমি নতজানু হইয়া তাঁহারদের পূজা করি, তাঁহাদের পদধূলি গ্রহণ করি।”
“এই বার্তাবহগণ নিশ্চয়ই ঈশ্বরের নিকট হইতে আসেন, নতুবা তাঁহারা কিভাবে এত মহান্ হইতে পারিয়াছিলেন?”
“মহম্মদের ধর্ম আবির্ভূত হয় জনসাধারনের জন্য বার্তা রূপে। তাঁহার প্রথম বাণী ছিল-'সাম্য'।...একমাত্র ধর্ম আছে-তাহা প্রেম।”
“জাতি বর্ণ বা অন্য কিছুর প্রশ্ন নাই। এই সাম্য ভাবে যোগ দাও ! সেই কার্যে পরিণত সাম্যই জয়যুক্ত হইল।...সেই মহতী বাণী ছিল খুব সহজ সরলঃ স্বর্গ ও মর্তের স্রষ্টা এক ঈশ্বরে বিশ্বাসী হও। শূন্য হইতে তিনি কিছু সৃষ্টি করিয়াছেন। কিোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিও না।...”
“পরবর্তী জীবনে মহম্মদ অনেক পত্নী গ্রহন করেন। মহাপুরুষেরা প্রত্যেকে দুই শত পত্নী গ্রহন করিতে পারেন। আপনাদের মতো 'দৈত্য'কে এক পত্নী গ্রহণ করিতেও আমি অনুমতি দিব না। মহাপুরুষদের চরিত্র রহস্যাবৃত। তাহাদের কার্যধারা দুর্জ্ঞেয়। তাহাদিগকে বিচার করিতে যাওয়া আমাদের অনুচিত। খ্রীষ্ট বিচার করিতে পারেন মহম্মদকে। আপনি আমি কে? —শিশুমাত্র।”
— মহম্মদ : স্যান ফ্রান্সিস্কো বে-অঞ্চলে ১৯০০ খৃঃ ২৬শে মার্চ প্রদত্ত বক্তৃতার সংক্ষিপ্ত অনুলিপির অনুবাদ।
“... স্বাধীনতা লাভ কর, সব কিছু লাভ কর, কিন্তু নারী চরিত্রের এই বৈশিষ্ট্যটি ( বিশ্বাসপ্রবণ হওয়া) যেন হারাইও না !...”
— মহম্মদ : স্যান ফ্রান্সিস্কো বে-অঞ্চলে ১৯০০ খৃঃ ২৬শে মার্চ প্রদত্ত বক্তৃতার সংক্ষিপ্ত অনুলিপির অনুবাদ।
পৃথিবী বিস্তৃত ভূখন্ডের উপর যখন মহম্মদ আধিপত্য লাভ করেন, তখন রোম ও পারস্য সাম্রাজ্য তাঁহার দ্বারা প্রভাবিত হয়। তাঁহার একাধিক পত্নী ছিলেন। পত্নীদিগের মধ্যে কে তাঁহার সর্বাপেক্ষা প্রিয়, জিজ্ঞাসিত হইয়া তিনি প্রথম পত্নীর কথা উল্লেখ করিয়া বলেন, 'তিনিই আমাকে প্রথম বিশ্বাস করেন। মেয়েদের মন বিশ্বাসপ্রবণ।...স্বাধীনতা লাভ কর, সব কিছু লাভ কর, কিন্তু নারী চরিত্রের এই বৈশিষ্ট্যটি যেন হারাইও না !...
“দুর্জনেরা সর্বদাই দোষ-ত্রুটি খোঁজে। ...মাছি ক্ষত অন্বেষণ করে, আর মধু মক্ষিকা শুধু ফুলের মধুর জন্য আসে। মক্ষিকা-বৃত্তি অনুসরণ করিবেন না, মধুমক্ষিকার পথ ধরুন।...”
— মহম্মদ : স্যান ফ্রান্সিস্কো বে-অঞ্চলে ১৯০০ খৃঃ ২৬শে মার্চ প্রদত্ত বক্তৃতার সংক্ষিপ্ত অনুলিপির অনুবাদ।
“নিজ নিজ প্রকৃতির নিকট খাঁটি হওয়াই সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ধর্ম। নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন। যদি আপনার নিজের অস্তিত্ব না থাকে, তবে ঈশ্বর অথবা অন্য কাহারও অস্তিত্বই বা কিরূপে থাকিবে ?”
— মহম্মদ : স্যান ফ্রান্সিস্কো বে-অঞ্চলে ১৯০০ খৃঃ ২৬শে মার্চ প্রদত্ত বক্তৃতার সংক্ষিপ্ত অনুলিপির অনুবাদ।
“তাঁহারা (মহাপুরুষগণ) বলেন, 'ভাতৃগণ, আগাইয়া যাও'। আর আমরা তাঁহাদিগকে আঁকড়াইয়া থাকি ; নড়িতে চাহি না ; আমরা চিন্তা করিতে চাহি না, আমরা চাই অন্যে আমাদের জন্য চিন্তা করুক।... শত বৎসর পরে তাঁহার বাণী আমরা আঁকরাইয়া ধরি এবং নিশ্চিন্তে নিদ্রা যাই।”
— মহম্মদ : স্যান ফ্রান্সিস্কো বে-অঞ্চলে ১৯০০ খৃঃ ২৬শে মার্চ প্রদত্ত বক্তৃতার সংক্ষিপ্ত অনুলিপির অনুবাদ।
“ধর্ম, বিশ্বাস ও মতবাদ সম্বন্ধে কথা বলা সহজ, কিন্তু চরিত্র গঠন ও ইন্দ্রিয় সংযম খুব কঠিন। এ বিষয়ে আমরা পরাভূত হই, কপট হইয়া পড়ি।...”
“ধর্ম কোন মতবাদ নহে, কতক গুলি নিয়মও নহে। ধর্ম একটি পক্রিয়া। মতবাদ ও নিয়মগুলি অনুশীলনের জন্যই আবশ্যক। সেই অনুশীলনের দ্বারা আমারা শক্তি সঞ্চয় করি এবং অবশেষে বন্ধন ছিন্ন করিয়া মুক্ত হই। মতবাদ ব্যায়ামবিশেষ —ইহা ছাড়া তাহার অন্য কোন উপকারিতা নাই।... অনুশীলনের দ্বারা আত্মা পূর্ণত্ব প্রাপ্ত হয়। যখন আপনি বলিতে পারেন, 'আমি বিশ্বাস করি'-তখনই সেই অনুশীলনের পরিসমাপ্তি।...”
— মহম্মদ : স্যান ফ্রান্সিস্কো বে-অঞ্চলে ১৯০০ খৃঃ ২৬শে মার্চ প্রদত্ত বক্তৃতার সংক্ষিপ্ত অনুলিপির অনুবাদ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন