শূদ্র জাতি সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দের উক্তি
শূদ্র জাতি সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দের উক্তি
“চক্রাকার পথে এবার ভারতীয় সমাজে শুধ্রের জাগরণ ঘটতে এবং আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হতে বাধ্য।”
— স্বামী বিবেকানন্দ
উক্তিটি ইংরেজিতে পড়ুন
উক্তিটির উৎস ও প্রসঙ্গ জানুন :
বাংলা তথা ভারতের জাতীয়তাবাদ বিকাশে স্বামী বিবেকানন্দের ভূমিকা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এ সম্পর্কে তাঁর মতামত প্রতিষ্ঠা ও তার প্রচার করার জন্য তিনি রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। রামকৃষ্ণ মিশনের মুখপত্র ‘উদ্বোধন’ পত্রিকায় তিনি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ প্রকাশ করেছিলেন। এগুলোই পরবর্তীকালে ভাববার কথা, বর্তমান ভারত, পরিব্রাজক, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ইত্যাদি নামে প্রকাশিত হয়।
‘বর্তমান ভারত’ গ্রন্থটি ১৯০৫ সালে স্বামী শুদ্ধানন্দের উদ্যোগে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। এই গ্রন্থে তিনি বৈদিক যুগ থেকে ব্রিটিশ শাসন পর্যন্ত ভারতের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস আলোচনা ও ব্যাখ্যা করেছেন। এই ব্যাখ্যায় তিনি তুলে ধরেছেন, ভারতীয় সমাজের বর্ণবৈষম্য এবং দলিত শূদ্রদের প্রতি বঞ্চনার ইতিহাস। এই বঞ্চনার বিরুদ্ধেও তিনি তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছেন। সেই সঙ্গে দেখিয়েছেন, বৈদিক যুগে ব্রাহ্মণ পুরোহিত, পরে শক্তিশালী যোদ্ধা, এবং সবশেষে বৈশ্যরা সমাজে কীভাবে নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছে। এই বিশ্লেষণের শেষে তিনি ভবিষ্যৎবাণী করেছেন যে, চক্রাকার পথে বৈশ্যের পর এবার ভারতীয় সমাজে শূদ্রের জাগরণ ঘটতে এবং তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হতে বাধ্য।
এভাবে সমাজের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের হাতে সমাজ গড়ে ওঠার ভাবনা ছিল তাঁর। সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় যে প্রকৃত স্বাধীনতা তা তাঁর এই গ্রন্থে (বর্তমান ভারত) বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। স্বামীজি দরিদ্র ও অবহেলিত ভারতবাসীর জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে ভাই বলে মনে করার আহ্বান জানিয়েছেন।
-----------xx-----------
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন