বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কে  অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের উক্তি :

“জানি না, কোন্ অস্ত্র দিয়ে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে লড়া হবে। কিন্তু চতুর্থ বিশ্বযুদ্ধটি লড়া হবে লাঠি ও পাথর দিয়ে।”

— অ্যালবার্ট আইনস্টাইন

উক্তিটি ইংরেজিতে পড়ুন

উক্তিটির উৎস ও প্রসঙ্গ জানুন :

“আমি জানি না তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ কোন্ অস্ত্র দিয়ে হবে, তবে চতুর্থ বিশ্বযুদ্ধটি লাঠি এবং পাথর দিয়ে হবে” —এই উক্তিটি ব্যাপকভাবে আলবার্ট আইনস্টাইনের নামে পরিচিত ও প্রচারিত। 

যদিও আইনস্টাইন তাঁর প্রকাশিত কোন্ রচনায় এই বাক্যাংশটি লিখেছেন বা বলেছেন তার কোনও সুনির্দিষ্ট রেকর্ড নেই। এটি পারমাণবিক যুদ্ধের বিপদ সম্পর্কে তাঁর সতর্কীকরণের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই অনুভূতিটি তাঁর এই বিশ্বাসকে প্রতিফলিত করে যে, একটি বৃহৎ আকারের পারমাণবিক সংঘর্ষ মানব সভ্যতাকে ধ্বংস করে দিতে পারে এবং সম্ভাব্যভাবে মানবতাকে আদিম অবস্থায় নিয়ে যেতে পারে। 

সম্ভাব্য উৎপত্তি এবং প্রসঙ্গ: 

১৯৪৮ সালে ‘লিবারেল ম্যাগাজিন’ (এটি বর্তমানে বিলুপ্ত প্রকাশনা)-এ আইনস্টাইনের একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছিল। এখানেই তিনি সর্বপ্রথম অনুরূপ কিছু বলার বা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছিলেন। - এটি পরে পারমাণবিক শক্তির ধ্বংসাত্মক প্রভাব বিষয়ে ‘ঠান্ডা যুদ্ধ সম্পর্কিত আলোচনা’তে খুব জনপ্রিয় হয়েছিল।

“আমি জানি না তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ কোন্ অস্ত্র দিয়ে সংঘটিত হবে...” — এই অংশে আইনস্টাইন ভবিষ্যত-অস্ত্রের ভয়াবহ সম্ভাবনার কথা স্বীকার করেছেন, বিশেষ করে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ধ্বংসাত্মক পরিণতির কথা বলেছেন। “...কিন্তু চতুর্থ বিশ্বযুদ্ধ লাঠি এবং পাথর দিয়ে সংঘটিত হবে” —এই অংশটি তাঁর সেই বিশ্বাস বা ভবিষ্যৎবাণীকে তুলে ধরে যে, ধ্বংসাত্মক প্রযুক্তির প্রতি মানুষের অবিরাম প্রচেষ্টা শেষ পর্যন্ত যুদ্ধে পশ্চাদপসরণের দিকে নিয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ যদি সংঘাতের চক্র চলতে থাকে, তবে মানুষ একদিন আদিম ও মৌলিক অস্ত্রে আশ্রয় নিতে বাধ্য হবে। 

তবে আইনস্টাইন এই রকমই একটি চিন্তাভাবনা প্রকাশ করেছিলেন,  ১৯৪৯ সালের NBC-এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে: তিনি বলেছিলেন, “আমি জানি না তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে কীভাবে লড়াই করা হবে, তবে আমি আপনাকে বলতে পারি, তারা চতুর্থ বিশ্বযুদ্ধে কী ব্যবহার করবে — পাথর!”

 সুতরাং, যদিও শব্দের ভিন্নতা রয়েছে, তথাপি এ কথা নিশ্চিত ভাবে বলা যায়, উদ্ধৃতিটির মধ্যে থাকা ভবিষ্যত যুদ্ধের বিপর্যয়কর পরিণতি সম্পর্কে আইনস্টাইনের দৃষ্টিভঙ্গির সাথে উপরে উল্লেখিত (আলোচনার শুরুতে) মূল উক্তিটি গভীরভাবে সম্পর্কিত। প্রকৃতপক্ষে, এই উক্তিটি যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান প্রযুক্তিগত শক্তি সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং এই চক্র যদি চলতে থাকে, তবে মানুষকে আদিম যুদ্ধ-পদ্ধতিতে ফিরে আসার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়। 

--------xx-------