বুদ্ধিমান সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দের উক্তি

বুদ্ধিমান মানুষ সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দের উক্তি

“মনের মত কাজ পেলে অতি মূর্খ করতে পারে। যে সকল কাজকেই মনের মত করে নিতে পারে, সেই বুদ্ধিমান।”

—স্বামী বিবেকানন্দ
উক্তিটি ইংরেজিতে পড়ুন
উক্তিটির উৎস ও প্রসঙ্গ জানুন :

Swami Vivekananda's quotes about intelligence
Swami-Vivekanandas-quotes-about-intelligence

এই উক্তিটি স্বামী বিবেকানন্দের কর্মদর্শন সম্পর্কিত এক গভীর তাৎপর্যপূর্ণ বাণী। এই উক্তিটি কেবল কর্মপ্রেরণার উৎস নয়, এটি যোগশাস্ত্রের আলোকে মানুষের মানসিক নিয়ন্ত্রণ এবং ইচ্ছাশক্তির পরাকাষ্ঠা নির্ধারণ করে।

উৎস :

গ্রন্থগত উৎসের দিক থেকে এই উক্তিটি স্বামী বিবেকানন্দের একটি ব্যক্তিগত চিঠির অংশ। এটি ইংরেজি সংকলন The Complete Works of Swami Vivekananda (CWSV)-এর সপ্তম খণ্ড (Volume VII)-এর অন্তর্গত 'পত্রাবলী - তৃতীয় পর্যায়' (Epistles - Third Series)-এর ৪০ নং চিঠি (Letter XL)-এ সংকলিত হয়েছে । এই উক্তিটির ইংরেজি মূল রূপটি হলো: “Even the greatest fool can accomplish a task if it be after his heart. But the intelligent man is he who can convert every work into one that suits his taste”

স্বামীজি এই চিঠিটি তাঁর অন্যতম প্রধান শিষ্য স্বামী শুদ্ধানন্দকে উদ্দেশ্য করে ১৮৯৭ সালের ১১ই জুলাই তারিখে লিখেছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা গ্রন্থেও এটি 'পত্রাবলী' বিভাগে বা কর্মযোগ সংক্রান্ত আলোচনায় উদ্ধৃত হয়েছে।

এই উক্তিটি শুধুমাত্র একটি প্রেরণামূলক বক্তব্য নয়, বরং এটি স্বামীজির কর্মযোগের (Karma Yoga) আদর্শের মূল ভিত্তি স্থাপন করে।

প্রসঙ্গ :

স্বামী বিবেকানন্দের এই উক্তিটির গ্রন্থগত প্রমাণ অত্যন্ত সুনির্দিষ্ট। এই চিঠিটি The Complete Works of Swami Vivekananda (CWSV) গ্রন্থের সপ্তম খণ্ডের একটি অংশ। CWSV, Volume VII, Page 508-এ এই উক্তিটির অবস্থান নিশ্চিত করা যায়। স্বামী শ্রদ্ধানন্দকে লেখা এই চিঠিটি সেই সময়ে লেখা হয়েছিল, যখন স্বামীজি ভারতে ফিরে এসে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি স্থাপনের কাজে নিয়োজিত ছিলেন। ১৮৯৭ সালের ১১ই জুলাই স্বামী শুদ্ধানন্দকে লেখা এই চিঠিতে স্বামীজি মিশনের সাংগঠনিক কাঠামো, কর্মী নিয়োগ (যেমন তিনটি 'মহান্ত' নির্বাচন), এবং দুর্ভিক্ষ ত্রাণের (famine-relief) মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নির্দেশনা দিচ্ছিলেন । স্বামীজি তাঁর শিষ্যদের কাছে স্থায়ী কার্যসম্পাদনের গুরুত্ব এবং অল্প সম্পদ দিয়েও সর্বোচ্চ সুফল পাওয়ার জন্য 'original ideas' চিন্তা করার উপর জোর দিয়েছিলেন । এই সাংগঠনিক প্রেক্ষাপটে, কাজের প্রতি সঠিক মানসিকতা গড়ে তোলার গুরুত্ব বোঝানোর জন্যই তিনি এই দার্শনিক সত্যটি তুলে ধরেন। তিনি চাননি যে তাঁর শিষ্যেরা কাজকে ছোট বা বড়, প্রিয় বা অপ্রিয়—এভাবে বিচার করে তার কার্যক্ষমতা নির্ধারণ করুক।

কর্মের মহত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করার সময় স্বামীজি এই চিঠিতে আরও বলেন যে, "No work is petty. Everything in this world is like a banyan-seed, which, though appearing tiny as a mustard-seed, has yet the gigantic banyan tree latent within it. He indeed is intelligent who notices this and succeeds in making all work truly great" । এই অনুচ্ছেদটি সরাসরি ব্যবহারকারীর জিজ্ঞাসিত উক্তিটির তাৎক্ষণিক অনুগামী, যা প্রমাণ করে যে স্বামীজি এই সময়ে কাজের বাহ্যিক রূপ নয়, বরং কর্মীর মানসিকতা ও দূরদর্শিতার উপর জোর দিচ্ছিলেন।

২.২. বাংলা উৎসের প্রাধান্য ও অনুবাদগত জটিলতা

সাধারণত, স্বামী বিবেকানন্দের রচনাবলী ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষায় সংকলিত হলেও, তাঁর পাশ্চাত্য বক্তৃতাগুলির উৎস ছিল ইংরেজি। তবে স্বামী শুদ্ধানন্দকে লেখা এই চিঠিটির একটি বিশেষ ভাষাগত তাৎপর্য বিদ্যমান। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, CWSV-তে সংকলিত এই অনুচ্ছেদটির পাদটীকা বা অতিরিক্ত তথ্যে স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে যে, "This paragraph only is translated from Bengali" ।
এই তথ্যটি নির্ধারণ করে যে, যদিও ইংরেজি গ্রন্থাবলীতে এর সংকলন রয়েছে, উক্তিটির মূল রচনা বা আদি পাঠটি ছিল বাংলা ভাষাতেই। যেহেতু স্বামী শুদ্ধানন্দ তাঁর বাঙালি শিষ্যদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন এবং চিঠিটি ভারতে মঠের অভ্যন্তরের কাজ পরিচালনার প্রসঙ্গে লেখা, তাই এটি মূলতঃ বাংলায় রচিত হওয়া খুবই স্বাভাবিক ছিল। এই ভাষাগত উৎস নিশ্চিত করার মাধ্যমে ব্যবহারকারীর প্রদত্ত বাংলা রূপটি যে মূল বক্তব্য থেকে বিচ্যুত নয়, তা প্রমাণিত হয়। স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা গ্রন্থে এই উক্তিটি 'পত্রাবলী' বিভাগে অন্তর্ভুক্ত থাকার মাধ্যমেও এর বাংলা উৎসের প্রাধান্য সমর্থিত হয়।

[নিচে উৎসের তুলনামূলক বিশ্লেষণ দেওয়া হলো:]

III. দার্শনিক বিশ্লেষণ: 'মূর্খ' বনাম 'বুদ্ধিমান' :

স্বামী বিবেকানন্দের এই উক্তিটি মানুষের ইচ্ছাশক্তি (Will Power) এবং পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে। তিনি 'মূর্খ' এবং 'বুদ্ধিমান'—এই দুটি পদকে শুধুমাত্র প্রচলিত জ্ঞান বা দক্ষতার মাপকাঠিতে সংজ্ঞায়িত করেননি, বরং কর্মযোগের আলোকে মানসিক স্বাধীনতা ও অনাসক্তির ভিত্তিতে বিশ্লেষণ করেছেন।

৩.১. কর্মের প্রতি আসক্তির সংজ্ঞা

বিবেকানন্দের সংজ্ঞায় 'অতি মূর্খ' (The greatest fool) সেই ব্যক্তি, যার কর্মের ক্ষমতা বা উৎসাহ বাহ্যিক পরিবেশ এবং কাজের প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল । যখন কাজটি তার 'মনের মত' (after his heart/taste) হয়, তখন সে তা সহজেই সম্পন্ন করতে পারে । এই ধরনের কর্মপদ্ধতি নির্দেশ করে যে ব্যক্তিটি ফলাকাঙ্ক্ষা (Attachment to results) এবং আসক্তি দ্বারা চালিত।
আসক্তিমূলক কর্মে, যদি কাজটির বাহ্যিক আকর্ষণ কমে যায় বা কাজটি অপ্রত্যাশিতভাবে কঠিন মনে হয়, তবে সেই ব্যক্তি কর্ম করতে অপারগ বা অনিচ্ছুক হয়ে পড়ে। এই নির্ভরশীলতা বস্তুত মানসিক পরাধীনতার লক্ষণ। একজন মূর্খ ব্যক্তি বাহ্যিক উদ্দীপনা ছাড়া কাজ করতে পারে না, এবং তার কর্মক্ষমতা সদা পরিবর্তনশীল পারিপার্শ্বিকতার দাসত্ব করে। এটি সেই স্থিতধী বা আত্ম-নিয়ন্ত্রিত অবস্থার সম্পূর্ণ বিপরীত, যা যোগসাধনার মূল লক্ষ্য।

৩.২. বুদ্ধিমত্তা, মানসিক স্বাধীনতা ও ইচ্ছাশক্তি

বিবেকানন্দ 'বুদ্ধিমান' (The intelligent man) বলতে এমন একজনকে বোঝান, যিনি তার কাজকে নিজের রুচি বা আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী রূপান্তর করতে পারেন ("convert every work into one that suits his taste") । এই রূপান্তর কাজের বাহ্যিক পরিবর্তন ঘটায় না, বরং কর্মীর নিজস্ব মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি ও অভ্যন্তরীণ প্রস্তুতিকে বোঝায়। এই মানসিক রূপান্তরের ক্ষমতা আসে নিজের ইচ্ছাশক্তির (Will Power) উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থেকে।
একজন বুদ্ধিমান কর্মী তার মনকে এমনভাবে প্রশিক্ষণ দেন যে কাজের প্রকৃতি নির্বিশেষে, তিনি তাতে সম্পূর্ণ মনোযোগ ও আত্মনিবেদন বজায় রাখতে পারেন। এটি হলো যোগের পথ—কর্মের মাধ্যমে মুক্তি লাভ । এটি অভ্যন্তরীণ স্বাধীনতার সর্বোচ্চ প্রকাশ, কারণ ব্যক্তি আর বাহ্যিক নিয়ামক দ্বারা চালিত হয় না। স্বামীজি বিশ্বাস করতেন যে স্বাধীনতা ছাড়া কোনো প্রকৃত প্রেম বা কাজ সম্ভব নয়; দাসত্বে কোনো সত্য প্রেম নেই । যখন ব্যক্তি কাজকে নিজের অনুগত করে তুলতে পারে, তখন সে মানসিক স্বাধীনতা অর্জন করে। এই স্বাধীনতা অর্জিত হয় আত্ম-নিয়ন্ত্রণ, যা স্ব-শিক্ষা (Self-education) এবং আত্মার জ্ঞান দ্বারা পরিপুষ্ট । এই মানসিক নিয়ন্ত্রণ অর্জনই কর্মযোগের ফল, যা মানুষকে কর্তব্যের বন্ধন থেকে মুক্ত করে কর্মকে উপাসনায় (Work is Worship) রূপান্তরিত করে।

৩.৩. কাজের মহত্ত্বের ধারণা

এই দার্শনিক নীতিটি কেবল মানসিক নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে নয়, বরং সমস্ত কাজের অন্তর্নিহিত মহত্ত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ। স্বামীজি অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বলেন যে, "No work is petty" । তাঁর মতে, এই পৃথিবীতে সমস্ত কাজই একটি বট বীজের মতো, যা দেখতে ক্ষুদ্র হলেও এর মধ্যে বিশাল বটবৃক্ষ লুকিয়ে থাকে ।
যে ব্যক্তি বুদ্ধিমান, সে এই মহত্ত্বকে উপলব্ধি করে। তিনি শুধুমাত্র পছন্দসই বা উচ্চপদস্থ কাজই করেন না, বরং যেকোনো কাজ, তা যতই নিম্ন মনে হোক না কেন, তা নিজের মনোভাব দ্বারা মহৎ করে তোলেন । এই দৃষ্টিভঙ্গিটি নির্দেশ করে যে, কর্মের মহত্ত্ব কাজের স্তরের ওপর নির্ভরশীল নয়, বরং কর্মীর মনের গুণ এবং উদ্দেশ্য—অর্থাৎ অনাসক্তি ও প্রেমের উপর নির্ভরশীল। এই মানসিকতাই মানুষকে কর্মের মাধ্যমে মুক্তি এবং অভ্যন্তরীণ শান্তি অর্জন করতে সাহায্য করে।

[দার্শনিক ধারণা বিশ্লেষণের সারণী]

IV. প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ: সংগঠন ও কর্মযোগের আদর্শ

এই উক্তিটি স্বামীজির বিস্তৃত কর্মযোগের দর্শনের একটি সরাসরি প্রয়োগ, বিশেষত যখন তিনি ভারতে তাঁর সাংগঠনিক কাজ শুরু করেন। এই উক্তিটি আধ্যাত্মিক উপদেশ এবং ব্যবহারিক নেতৃত্বের নীতির এক সফল সংমিশ্রণ।

৪.১. কর্মযোগের সারমর্ম হিসাবে উক্তিটি

বিবেকানন্দের এই উক্তিটি সরাসরি তাঁর কর্মযোগ (Karma Yoga) গ্রন্থের মূল শিক্ষাকে প্রতিফলিত করে । কর্মযোগের মূল নীতি হলো অনাসক্ত কর্ম (Unattached Work)। অনাসক্তির অর্থ ফলাফলের প্রতি যত্নশীল না হওয়া: "To work we have the right, but not to the fruits thereof”। কর্মের ফল নিয়ে চিন্তা না করলে মন শান্ত ও একাগ্র থাকে।

একজন বুদ্ধিমান ব্যক্তি যখন কোনো কাজকে 'মনের মত করে নিতে' পারে, তখন তার অর্থ এই নয় যে সে কাজটিকে তার লোভনীয় বস্তুতে পরিণত করছে; বরং এর অর্থ হলো সে ফলাফল বা বাহ্যিক উদ্দীপনা থেকে তার মনকে বিচ্ছিন্ন করে কেবল কাজের প্রক্রিয়াতেই সম্পূর্ণভাবে নিজেকে নিয়োজিত করছে। যখন একজন ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত স্বার্থ (নাম বা খ্যাতি) ভুলে শুধু অন্যের মঙ্গলের জন্য কাজ করে, তখনই কর্ম প্রকৃত অর্থে জীবনে রূপান্তরিত হয় ("to work only for the good of others is life") । এই অনাসক্তিই কাজকে আধ্যাত্মিক অনুশীলনে উন্নীত করে।

৪.২. মঠ পরিচালনার কৌশল

১৮৯৭ সালে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন যখন সবেমাত্র ত্রাণকার্য (famine-relief), শিক্ষা ও সাংগঠনিক কাজ শুরু করে, তখন স্বামীজি তাঁর যুব শিষ্যদের মধ্যে এক দৃঢ় এবং নির্ভরযোগ্য কর্মসংস্কৃতি গড়ে তুলতে চাইলেন । মিশনের কাজগুলি প্রায়শই কঠিন, নীরস, এবং চিরাচরিত সন্ন্যাসজীবনের ধ্যান-ধারণার সঙ্গে মেলানো কঠিন ছিল।
এই সময়ে কর্মীদের মধ্যে যদি কাজ নির্বাচন করার প্রবণতা বা 'মনের মতো কাজ' খোঁজার আসক্তি থাকত, তবে সংগঠনের অত্যাবশ্যকীয় কিন্তু কম গ্ল্যামারাস কাজগুলি (যেমন দুর্ভিক্ষের ত্রাণ) অবহেলিত হতো। এই উক্তিটি ছিল এক কার্যকরী নেতৃত্ব ও ব্যবস্থাপনা কৌশল, যা কর্মীদের অনুপ্রাণিত করতে সাহায্য করেছিল। স্বামীজি তাঁর কর্মীদের মধ্যে এই মানসিকতা তৈরি করতে চাইলেন যে কাজের গুরুত্ব কাজের বাহ্যিক প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে না, বরং কর্মীর মানসিকতার ওপর নির্ভর করে।

তিনি তাঁর শিষ্যদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ স্থায়ী ও কার্যকর ফলাফল প্রত্যাশা করতেন: "We want the greatest possible good work permanent from the least outlay" । এটি অর্জন করতে হলে কর্মীদের অবশ্যই অভ্যন্তরীণ ক্ষমতা ব্যবহার করে যেকোনো পরিস্থিতি বা কাজকে গ্রহণ করতে হতো। এই দার্শনিক নীতি প্রয়োগের মাধ্যমে স্বামীজি কাজের প্রতি ব্যক্তিগত আসক্তি দূর করে কর্মীদের মধ্যে কাজ করার সময় আত্মম্ভরিতা (ego) থেকে দূরে থাকার এবং দাতাকে নয় বরং গ্রহীতাকে উচ্চতর মনে করার শিক্ষা দেন । এইভাবেই এই উক্তিটি কেবল আধ্যাত্মিক শিক্ষা না হয়ে, একটি শক্তিশালী সাংগঠনিক নীতির ভিত্তি স্থাপন করেছিল।

৪.৩. সাফল্যের জন্য প্রয়োজনীয় গুণাবলী

বিবেকানন্দ কর্ম সম্পাদনে সাফল্যের জন্য যে মৌলিক গুণগুলির কথা বলেছেন, এই উক্তিটি সেগুলির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। তিনি স্পষ্ট করেছিলেন যে, সাফল্য অর্জনের জন্য "Purity, patience, and perseverance are the three essentials to success and, above all, love" ।
যে ব্যক্তি তার মানসিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবহার করে যেকোনো কাজকে নিজের রুচি মাফিক করে নিতে পারে, তার মধ্যে স্বভাবতই ধৈর্য (patience) এবং অধ্যবসায় (perseverance) থাকে। কারণ, সে বাহ্যিক অসুবিধা বা ফলাফলের অনিশ্চয়তা দ্বারা সহজে বিচলিত হয় না। কাজকে মনের মতো করে নেওয়ার এই প্রক্রিয়াটি কর্মীর চরিত্র গঠনে সাহায্য করে; কারণ চরিত্র গঠনের জন্য "a thousand stumbles" বা হাজারো হোঁচট খাওয়ার পরও দীর্ঘ ও নিরন্তর প্রচেষ্টার প্রয়োজন হয় । এভাবে, বুদ্ধিমান ব্যক্তির সংজ্ঞার মধ্যেই সাফল্যের এই অপরিহার্য গুণাবলী প্রচ্ছন্ন থাকে।

V. আধুনিক যুগে উক্তিটির প্রাসঙ্গিকতা

স্বামী বিবেকানন্দের এই উক্তিটি কর্ম ও জীবনের ক্ষেত্রে আধুনিক মনোবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনার একাধিক ধারণার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি নির্দেশ করে যে আধ্যাত্মিক নীতিগুলি কীভাবে আধুনিক কর্মক্ষেত্রের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহায়ক হতে পারে।

৫.১. মনোবিজ্ঞান ও কর্মক্ষেত্রের দর্শন

আধুনিক মনোবিজ্ঞানে 'Job Crafting' নামে একটি ধারণা প্রচলিত আছে, যেখানে কর্মীরা তাদের কাজের নির্দিষ্ট ক্ষেত্র, সম্পর্ক এবং ধারণাগত সীমানা পুনর্নির্মাণ করে নিজেদের কাজের প্রতি আরও সন্তুষ্টি ও অর্থপূর্ণতা খুঁজে পান। স্বামীজির "যে সকল কাজকেই মনের মত করে নিতে পারে"—এই ধারণাটি এই মনোবৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ার একটি আধ্যাত্মিক পূর্বসূরি। তিনি জোর দিয়েছিলেন অভ্যন্তরীণ পরিবর্তনের ওপর: "We have to grow from the inside out" । এই শিক্ষায় কোনো বাহ্যিক শিক্ষক নেই, কেবল নিজের আত্মাই সঠিক পথ দেখাতে পারে ।
এই উক্তিটির মূল বিষয় হলো কর্মীর মানসিক নিয়ন্ত্রণ, যা কর্মক্ষেত্রে সন্তুষ্টি (Job Satisfaction) বা কাজের আনন্দ বাহ্যিক সুবিধা বা উচ্চ বেতনের চেয়ে বরং ব্যক্তির নিজস্ব মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি ও অভ্যন্তরীণ উদ্দেশ্য থেকে আসে—এই ধারণাকে প্রতিষ্ঠা করে। বুদ্ধিমান কর্মীর এই প্রক্রিয়াটি কর্মীদের মধ্যে আত্ম-অনুপ্রাণিত (Intrinsic Motivation) হওয়ার প্রবণতা বাড়ায়, যা দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা এবং সৃজনশীলতার জন্য অপরিহার্য।

৫.২. নৈতিক নেতৃত্ব ও সামাজিক কাজ

নেতৃত্ব ও সামাজিক কাজের ক্ষেত্রে এই উক্তিটির নৈতিক প্রাসঙ্গিকতা অনস্বীকার্য। বিবেকানন্দ এমন একটি নৈতিক কাঠামোর পক্ষে ছিলেন, যেখানে কাজের প্রকৃতি দ্বারা মানুষের মর্যাদা নির্ধারিত হয় না। তিনি স্পষ্ট করে বলেছিলেন, “He who does the lower work is not therefore a lower man…” । বরং, যখন একজন ব্যক্তি কাজ করার সময় মনে করে যে সে গ্রহীতার চেয়ে নিম্ন, তখন সে বিনয়ের সঙ্গে সেবা করে ।
এই নীতি সামাজিক সংস্কার ও জনকল্যাণমূলক কাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে কাজ প্রায়শই কঠিন, নোংরা এবং অকৃতজ্ঞ হয়। বুদ্ধিমান কর্মীর এই মানসিকতা নিশ্চিত করে যে সমাজসেবা কেবল নাম বা খ্যাতির জন্য নয় (যা মূর্খের লক্ষণ), বরং এটি মানবকল্যাণ এবং ব্যক্তিগত আত্মিক উন্নতির একটি পথ। এটি নৈতিক নেতৃত্বকে উৎসাহিত করে যা ব্যক্তিগত সুবিধা বা অহংকার থেকে মুক্ত।

VI. উপসংহার: কর্মের মাধ্যমে মুক্তি

“মনের মত কাজ পেলে অতি মূর্খ করতে পারে। যে সকল কাজকেই মনের মত করে নিতে পারে, সেই বুদ্ধিমান।”—স্বামী বিবেকানন্দের এই উক্তিটি ১৮৯৭ সালের ১১ই জুলাই স্বামী শুদ্ধানন্দকে লেখা একটি সাংগঠনিক নির্দেশনা ছিল, যা The Complete Works of Swami Vivekananda (Volume VII, Letter XL) এবং স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে। এটি বাংলা ভাষায় রচিত হয়েছিল এবং পরে ইংরেজিতে অনূদিত হয়।

এই উক্তিটি একটি গভীর দার্শনিক ভিত্তি বহন করে। এটি কর্মযোগের মূল নীতি—অনাসক্তি এবং মানসিক স্বাধীনতার উপর জোর দেয়। বিবেকানন্দ 'বুদ্ধিমান' বলতে সেই কর্মীকে বোঝান, যিনি সচেতন ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগ করে পরিবেশ বা কাজের প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল না হয়ে, নিজের মানসিক অবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। এই নিয়ন্ত্রণই কর্মের মাধ্যমে মুক্তির পথ, যেখানে কোনো কাজই তুচ্ছ থাকে না, বরং প্রত্যেক কাজই আত্মিক উপলব্ধির বটবৃক্ষের বীজ হয়ে ওঠে । চূড়ান্তভাবে, এই উক্তিটি প্রমাণ করে যে স্বামী বিবেকানন্দের কর্মদর্শন কেবল আধ্যাত্মিক উপদেশ নয়, এটি বাস্তব জীবনে সর্বোচ্চ কর্মদক্ষতা এবং ব্যক্তিগত চরিত্র গঠনের জন্য একটি শক্তিশালী ও কার্যকর নেতৃত্বের নীতি।

গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসূত্র :

1. The Complete Works of Swami Vivekananda/Volume 7/Epistles - Third Series/XL Shuddhananda - Wikisource, the free online library. 

2. SHUDDHANANDA - Essential Books of Ramakrishna Order,  

3. Full text of "Shri Shri Ramkrishna-bani Ed. 1st" - Internet Archive,  

4. The words of Swami Vivekananda. You cannot believe in God until you… | by Pavittar Singh | indiaaffairs, 

5. Swami Vivekananda's pronouncements on the Yoga of Work - Vedanta Center of Atlanta,  

6. Swami Purushottamananda - VivekaVani,  

7. MISS NOBLE - Essential Books of Ramakrishna Order,  

8. স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা,  

9. Swami Vivekanand : Profile - Bharat Vikas Parishad,  

10. Swami Vivekananda On Work - VivekaVani,  

11. Swami Vivekananda's Philosophy of Work and Its Relevancy with Modern Era,  

12. Swami Vivekananda on the Secret of Work: Intelligent Consolation for the Pressures of Productivity from 1896 - The Marginalian

মন্তব্যসমূহ

আরও দেখুন : 👉 বরণীয় মানুষের স্মরণীয় কথা

অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় অমর্ত্য সেন অমিত মালব্য অরুন্ধতী রায় অর্ধেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় অলডাস হাক্সলি অস্কার ওয়াইল্ড অ্যাঞ্জেলা ডেভিস অ্যাঞ্জেলা মার্কেল অ্যাডলাই স্টিফেনসন অ্যাডাম স্মিথ অ্যানিটা ব্রুকনার অ্যান্ড্রু জ্যাকসন অ্যারন কোপল্যান্ড অ্যারিস্টটল অ্যালবার্ট আইনস্টাইন অ্যালান ওয়াটস অ্যালান প্যাটন অ্যালান মুর অ্যালান সেভরি অ্যালিস ওয়াটার্স অ্যালেক্সিস হার্ম্যান আইজ্যাক গোল্ডবার্গ আওরঙ্গজেব আগাথা ক্রিস্টি আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় আচার্য সত্যেন্দ্র দাস আদি শঙ্করাচার্য আবু হামিদ আল গাজ্জালি আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা আব্রাহাম লিংকন আমির খসরু আর্থার শোপেনহাওয়ার আর্থার সি ক্লার্ক আলফ্রেড নোবেল আলবার্ট আইনস্টাইন আলব্যার কাম্যু আলী হোসেন আলেকজান্ডার আলেকজান্দ্রিয়া ওকাশিয়ো-কর্তেজ আল্লামা ইকবাল আসাদ উদ্দিন ওয়াইসি ইবনে সিনা ইমানুয়েল কান্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইয়াসের আরাফাত ইয়েভগেনি ইয়েভতুশেঙ্কো ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর উইনস্টন চার্চিল উইলিয়াম শেক্সপিয়ার উডি অ্যালেন উমর খালিদ ঋত্বিক ঘটক এ পি জে আবদুল কালাম এডওয়ার্ড গিবন এডওয়ার্ড মুঙ্ক এডওয়ার্ড স্নোডেন এডগার অ্যালান পো এম এস স্বামীনাথন এমা গোল্ডম্যান এরিয়েল ডুরান্ট এলভিস প্রেসলি এলিজিয়ার ইউডকভস্কি এলিফ শাফাক কনফুসিয়াস কপিল সিবল কমলা হ্যারিস কর্নেল সোফিয়া কুরেশি কল্পনা দত্ত কাজী নজরুল ইসলাম কার্ট কোবেন কার্ট ভনেগাট কার্ল ইয়ুং কার্ল মার্কস কাহিল জিব্রান কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাস কেশবচন্দ্র সেন কৌটিল্য ক্রিস পিরিলো ক্ষিতিমোহন সেন খালিদা পারভিন খালেদ হোসেইনি গুন্টার গ্রাস গুরজাদা আপ্পা রাও গোবিন্দ পানসারে গোল্ডা মেয়ার গৌতম বুদ্ধ গ্রেটা থুনবার্গ চন্দন রায় চাই জিং চাণক্য চার্লস বুকোওস্কি চিনুয়া আচেবে চে গেভারা জঁ পল সার্ত্র জওহরলাল নেহেরু জন এফ কেনেডি জর্জ অরওয়েল জর্জ ওয়াশিংটন জর্জ ক্যানিং জিড্ডু কৃষ্ণমূর্তি জিমি কার্টার জিমি হেনড্রিক্স জুলস রেনার্ড জে উইলিয়াম ফুলব্রাইট জেমস গ্রাহাম ব্যালার্ড জেমস বোভার্ড জোসেফ কনরাড জ্যাক-ইভেস কৌস্তু জ্যোতি বসু জ্যোতিরাও ফুলে টম পলিন টমাস জেফরসন টমাস মান ড. আহমদ শরীফ ড. মহাম্মদ ইউনুস ড. মায়া অ্যাঞ্জেলু ড. মেঘনাথ সাহা ডঃ রণজিৎ বসু ডরিস লেসিং ডেভিড অ্যাটেনবরো ডেরেক ও’ব্রায়ান ডেসমন্ড টুটু থিওডোর রুজভেল্ট থিচ নাট হান দলাই লামা দীনেশচন্দ্র সেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর দ্যুতি মুখোপাধ্যায় নরেন্দ্র মোদী নাইজেল ফারাজে নাওমি উলফ নাওমি ক্লাইন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু নেপোলিয়ন বোনাপার্ট নেলসন ম্যান্ডেলা নোম চমস্কি পল ভ্যালেরি পাবলো ক্যাসালস পার্থ চট্টোপাধ্যায় পিটার ইয়ারো পিথাগোরাস পূর্ণদাস বাউল পেট্রা নেমকোভা পেরিয়ার পোপ দ্বিতীয় জন পল পোপ ফ্রান্সিস প্রণব মুখোপাধ্যায় প্রতুল মুখোপাধ্যায় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ প্রশান্ত ভূষণ প্লুটার্ক প্লেটো ফিদেল কাস্ত্রো ফেই ফেই লি ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট ফ্রান্সিস বেকন ফ্রান্সেসকা ওরসিনি ফ্রিডরিখ নিৎশে ফ্রেড অ্যালেন ফ্লোরা লুইস বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বব ডিলান বব মার্লে বল্লভভাই প্যাটেল বান কি-মন বারাক ওবামা বার্ট্রান্ড রাসেল বার্নি স্যান্ডার্স বি আর আম্বেদকর বিচারপতি বিনোদ দিবাকর বিনায়ক দামোদর সাভারকার বিপ্লবী গণেশ ঘোষ বিমান বসুর মন্তব্য বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বেগম রোকেয়া বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন বেনিতো মুসোলিনি বেল হুকস ভগৎ সিং ভলতেয়ার ভি এস নইপল ভি এস নয়পল ভিক্টর হুগো ভিনসেন্ট ভ্যান গঘ ভ্যালারি জিঙ্ক ভ্লাদিমির লেনিন মকবুল ফিদা হুসেন মনমোহন সিং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহাত্মা গান্ধী মহাবীর মহাভারত মাও সে তুং মাওলানা জালালউদ্দিন রুমি মাওলানা ভাসানী মাদার টেরেসা মাদ্রী কাকোটি মার্ক টোয়েন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্গারেটর থ্যাচার মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র মার্টিন স্করসেজি মালালা ইউসুফজাই মাহদী মোহাম্মদী মাহমুদ দারুউইশ মিলন কুন্দেরা মিশেল ফুকো মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ মে ওয়েস্ট মেরি শেলি মোহন ভাগবত মোহাম্মদ আলী মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ম্যালকম এক্স যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত যদুনাথ সরকার যুধিষ্ঠির যোগেশচন্দ্র বাগল রঘুরাম রাজন রঞ্জন চক্রবর্তী রঞ্জিত সেন রণজিৎ গুহ রবার্ট ফ্রস্ট রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাজীব গান্ধী রামকিংকর বেজ রামকৃষ্ণ পরমহংস রিচার্ড ডকিন্স রুপসা রায় রুপি কাউর রেভারেন্ড অ্যান্ডু ফুলার রোজা পার্কস রোমিলা থাপার লর্ড এলগিন লি হুইটনাম লিও তলস্তয় লিওঁ ট্রটস্কি লুডভিগ উইটগেনস্টাইন লুপিতা নিইয়ং’ও লেনার্ড বার্নস্টাইন লেমনি স্নিকেট শংকরাচার্য শতাব্দী দাস শময়িতা চক্রবর্তী শমীক লাহিড়ী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় শিবরাম চক্রবর্তী শিবাজী শিমন পেরেস শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় শুভময় মিত্র শুভেন্দু অধিকারী শেখ মুজিবুর রহমান শেন ওয়ার্ন শ্রী সারদা দেবী শ্রীকৃষ্ণ শ্রীমদ্ভাগবত গীতা শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীআনন্দমূর্তি সক্রেটিস সত্যজিৎ রায় সমরেশ বসু সম্রাট আকবর সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণন সান ইয়াত সেন সালমান রুশদি সিগমুন্ড ফ্রয়েড সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায় সিমোন দ্য বোভোয়া সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সেবাস্তিয়ান লেলিয়ো সেরেনা উইলিয়ামস সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় সৌরভ গাঙ্গুলী স্টিফেন কিং স্টিফেন হকিং স্ট্যানলি কুব্রিক স্ট্রিট গ্যাং স্বামী বিবেকানন্দ স্যাম অল্টম্যান স্যার উইলিয়াম জোন্স স্লাভোজ জিজেক হওয়ার্ড জিন হজরত আলী হজরত মুহাম্মদ হযরত মুহাম্মদ হাইপেশিয়া হাফেজ ই সিরাজী হায়ায়ো মিয়াজাকি হিটলার হিপোক্রেটিস হিমাংশী নারওয়াল হেনরি ফোর্ড হেরাক্লিটাস হেরাস হেলমুট নিউটন হেলেন কেলার হোরেস হোসে সরামাগো
আরও দেখান

আরও দেখুন : 👉 গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্মরণীয় উক্তি

অবতার অবৈতনিক শিক্ষা অভাবি মানুষ অভিবাসী অমুসলিমদের অধিকার অরাজনৈতিক লেখক অর্থ বা টাকা অর্থনীতি অর্থনৈতিক সংস্কার অর্ধসত্য অলসতা অসততা অসত্য অসহিষ্ণুতা অসাম্য অহিংসা আইন আইনজীবী আত্ম সমীক্ষা আত্মরক্ষা আদর্শ সমাজ আধুনিক বিজ্ঞান আধ্যাত্বিক জীবন আমলাতন্ত্র আমলাদের ভূমিকা আমেরিকান ড্রিম আমেরিকার আরব ইসরাইল যুদ্ধ ইংরেজ ঐতিহাসিক ইংরেজ শাসন ইউক্রেন ইউনিয়ন ইউপিএ সরকার ইচ্ছা ইতিহাস ইনকাম ট্যাক্স ইসরাইল ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ ইসরাইলি গণহত্যা ইসলাম ইসলাম ধর্ম ঈশ্বর ঈশ্বর-দর্শন উকিল উদারনীতি উদারপন্থী উদ্দেশ্য উদ্বাস্তু উন্নতি উন্নয়ন উপকথা উপনিষদ উৎপাদন উৎসব একনায়কতন্ত্র ওয়াকফ আইন ওয়াল স্ট্রিট ওষুধ ঔদ্ধত্য ঔপনিবেশিকতা কবি ও কবিতা কবিতা কমিউনিজম কর্ম কলকাতা কল্পনা কাজ কাপুরুষতা কার্য-কারণ সম্পর্ক কাশ্মীরের নিরাপত্তা কুম্ভ মেলা কুসংস্কার কূটনীতি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কৃষি ব্যবস্থা কৃষি ব্যবস্থার সমস্যা কৃষিকাজ কৃষির সঙ্গে সংস্কৃতির সম্পর্ক কোরআন ক্যান্সার ক্যারিশমা ক্রিয়াবাদের মূলনীতি ক্রেডিট কার্ড কোম্পানি ক্ষমতা ক্ষমাশীলতা ক্ষুদ্রতা ক্ষুধা খরা ও বন্যা খোলা বাজার অর্থনীতি গণতন্ত্র গণনা গণহত্যা গবেষণা গো ভক্তি গো-হত্যা ঘৃণা বিদ্বেষ চাওয়া চাকরি চিকিৎসা চিন চিনা প্রবাদ চিন্তা চেতনা ছাত্র যুব জঙ্গল জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব জনবহুল শহর জন্তু জমির অধিকার জলবায়ু জাতপাত জাতিবিদ্বেষ জাতীয় আয় জাতীয় সুরক্ষা এজেন্সি জাতীয়তাবাদ জাতীয় পতাকা জায়নবাদ জিজিয়া কর জীবন জীবিকা জৈন ধর্ম জ্ঞান জ্ঞান চর্চা জ্ঞানী জ্ঞানী ব্যক্তি ঝুঁকি ডাক্তার ডাক্তারের দায়িত্ব ডেমোক্রেটিক পার্টি তিক্ততা তীর্থ দয়া দারিদ্র দাসত্ব দায়িত্ব দুঃখ দুঃখী মানুষ দুঃখের কারণ দুর্নীতি দূষণ দেখা দেশ দেশ ও ধর্ম দেশদ্রোহী দেশপ্রেম দ্বিজাতিতত্ত্ব ধনতন্ত্র ধনী ও ক্ষমতাধর ধরিত্রী ধর্ম ধর্ম ও উদারতা ধর্ম ও রাজনীতি ধর্মগুরু ধর্মগ্রন্থ ধর্মনিরপেক্ষতা ধর্মরাষ্ট্র ধর্মান্তরকরণ ধর্মীয় নিপীড়ন ধর্ষণ ধার্মিক ধৈর্যশীলতা নজরদারি ব্যবস্থা নতুন চিন্তা নতুন প্রজন্ম নদী নাগরিকত্ব নামকরণ নারী নারী অধিকার নারী আন্দোলন নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন নারী স্বাধীনতা নারীবাদ নারীবিদ্বেষ নারীর সাফল্য নাস্তিকতা নিন্দা নিয়ম নির্বাচন নির্বাচন কমিশন নির্বোধ নীরবতা নেতৃত্ব নৈরাজ্য ন্যায়বিচার ন্যায় পথ চলার নীতি পরমাণু যুদ্ধ পরিবর্তন পরিবার ভেঙে যাওয়া পরিবেশ দূষণ পরিশ্রম পরিসংখ্যান পলিটিক্যল কারেক্টনেস পশ্চিম এশিয়ার সংঘাত পহেলগাও পাগল পাপ পাসওয়ার্ড পুঁজি পুঁজিপতি পুঁজিবাদ পুথিপাঠ পুরুষ পুরুষ মানুষ পুরোহিত পুলওয়ামা সন্ত্রাসবাদী হামলা পূজা পৃথিবী পৃথিবীর সৃষ্টি পৌরাণিক কাহিনি প্যালেস্টাইন প্রকৃতি প্রতিকৃতি প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি প্রতিজ্ঞা প্রতিবাদ প্রতিভা প্রয়াণ দিবস প্রযুক্তি প্রস্তুতি প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রাকৃতিক পরিবেশ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা প্রিয় হবার কারণ প্রেম ফ্যাসিজম ফ্যাসিবাদ বক্তা বজ্রপাত বড় বিষয় বন্ধু বাঁশি বাঁশির সুর বাংলা ভাষা বাংলা ভাষা আন্দোলন বাংলা সাহিত্য বাংলাদেশ বাকস্বাধীনতা বাঙালি বার্ধক্য বিচার বিভাগের ক্ষমতা বিচার বিভাগের ভুল বিচারব্যবস্থা বিজয় বিজেপি সরকার বিজ্ঞান বিজ্ঞান চেতনা বিদ্যা বিদ্রোহ বিপর্যয় বিপ্লব বিবাহ বিশৃঙ্খলা বিশ্বযুদ্ধ বিশ্বাস বিশ্বের মূল সমস্যা বুড়ো হাওয়া বুদ্ধি বুদ্ধিমত্তা বুদ্ধিমান মানুষ বৃহৎ শহর বেহেস্ত বৈবাহিক ধর্ষণ বৈষম্য বোঝাপড়া বৌদ্ধধর্ম ব্যক্তি জীবন ব্যক্তি স্বার্থ ব্যবসা ব্রাহ্মণ ব্রিটিশ শিল্প ব্যবস্থা ভক্তি ও ভক্তিভাজন ভগবান ভয় ভর্তুকি ভারত ভারতবর্ষ ভারতীয় জনগণ ভারতীয় সংবিধান ভারতীয় সেনাবাহিনী ভারতের অর্থনীতি ভারতের ধর্ম ভালো থাকা ভালো নাগরিক ভালোবাসা ভাষা ভাষার বিলুপ্তি ভোট ভ্রাতৃত্ববোধ মত প্রকাশের স্বাধীনতা মন মনুষ্যত্ব মনের ব্যথা মন্দির মন্দির-মসজিদ বিতর্ক মহাকুম্ভ মহান আত্মা মহাবিশ্ব মহাভারত মহামারী মা মাতৃভাষা মানব পাচার মানব সভ্যতা মানবধিকার মানবসম্পদ মানুষ মানুষ হত্যা মারাঠা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মিউজিসিয়ান মিডিয়া মিথ্যা মুক্তির উপায় মুঘল সম্রাট মুসলমান মুসলিম বিজয় মৃত্যু মেধাবী মেয়েদের ক্ষমতা মোবাইল ফোন যুক্তি যুক্তিবাদী মানুষ যুদ্ধ রণকৌশল রাগ রাজধর্ম রাজনীতি রাজনীতিবিদ রাজনৈতিক ক্ষমতা রাষ্ট্র রাষ্ট্রপতি রোগ নিরাময় লক্ষ্য লাল ফিতা লেখক শঙ্কা শান্তি শান্তি পর্ব শাস্তি শিক্ষক শিক্ষকতা শিক্ষা শিক্ষাল্পতা শিক্ষিত বাঙালি শিক্ষিত মানুষ শিখ গণহত্যা শিখ-বিরোধী দাঙ্গা শিল্পের ভাষা শিল্পের স্বাধীনতা শিশু শিশুশ্রম শুদ্ধ ও সঠিক চিন্তা শূদ্র জাতি শোষক শোষণ শ্রম শ্রমিক শ্রেণি শ্রীলঙ্কা সংখ্যাগরিষ্ঠ সংখ্যালঘু সংগীত সংবিধান সংবিধানের বেসিক স্ট্রাকচার সংবেদনশীলতা সংস্কার সংস্কৃত ভাষা সংস্কৃতি সততা ও শিক্ষা সতর্কতা সত্য সন্ত্রাসবাদ সন্দেহ সন্ন্যাসী সবুজ উদ্ভিদ সমাজ সমাজ বিষয়ক সমাজচ্যুত দল সমাজতন্ত্র সমৃদ্ধি সম্পদ সম্মান সম্মেলন সরকার সহিষ্ণুতা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান সাধারণতন্ত্র সাফল্য সামাজিক স্বাধীনতা সাম্প্রদায়িকতা সাম্যবাদ সাম্রাজ্যবাদ সাহস সাহিত্যিক সিদ্ধান্ত সিনেমা বানানো সুখ সুন্দরতম জিনিস সুপ্রিম কোর্ট সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সুশাসন সৃষ্টিকর্তা সোনা সৌন্দর্য স্কুল বোর্ড স্ট্রিট গ্যাং স্ত্রীকে লেখা পত্র স্থায়িত্ব স্পিন বোলিং স্বপ্ন স্বর্গ স্বাধীনতা স্বাধীনতা সম্পর্কিত স্বামী স্বাস্থ্য স্বাস্থ্যব্যবস্থা স্লোগান হালকা হওয়া হাসি হিংসা হিন্দু হিন্দু ধর্ম হিন্দু মহাসভা হিন্দু মুসলমান সম্পর্ক হিন্দু মেলা হিন্দু রাষ্ট্র হিন্দু শাস্ত্র হিন্দু সমাজ হিন্দুত্ব হিন্দুদের সুরক্ষা হিন্দুর ভগবান হিন্দুশাস্ত্রে বিজ্ঞান
আরও দেখান

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ