ধর্মনিরপেক্ষতা সম্পর্কে জহরলাল নেহেরুর উক্তি
ধর্মনিরপেক্ষতা সম্পর্কে জহরলাল নেহেরুর উক্তি :
“আমরা প্রায়ই বলি যে, আমরা একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। এটা সত্যি। কিন্তু আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে সাম্প্রদায়িকতার দাগ সর্বত্র রয়েছে—কখনো প্রকাশ্যে, কখনো গোপনে। আমরা ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলি, কিন্তু কাজ করি অন্যভাবে।”
—পন্ডিত জহরলাল নেহেরুউক্তিটি ইংরেজিতে পড়ুন :
উক্তিটির উৎস ও প্রসঙ্গ জানুন :
১৯৫১ সালের ১৫ ই অক্টোবর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের উদ্দেশ্যে লেখা চিঠিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরু এই মন্তব্য করেছিলেন।
এই মন্তব্যের প্রাসঙ্গিক অংশসহ চিঠির আংশিক অংশ এখানে উদ্ধৃত করা হলো।
“আমরা প্রায়ই বলি যে, আমরা একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। এটা সত্যি। কিন্তু আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে সাম্প্রদায়িকতার দাগ সর্বত্র রয়েছে—কখনো প্রকাশ্যে, কখনো গোপনে। আমরা ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলি, কিন্তু কাজ করি অন্যভাবে। বিশ্বে এমন আর কোন রাষ্ট্র নেই যা ভারতের মতো সত্যিকারের ধর্মনিরপেক্ষ—যেখানে কোন ধর্মকে রাষ্ট্রের সঙ্গে ১ আসনে বসানো হয় না। এটা সহজ নয়, কারণ আমাদের দেশে ধর্মীয় আবেগ খুব প্রবল এবং জীবনের প্রায় সব ক্ষেত্রে ধর্মের প্রভাব রয়েছে। তবুও যদি আমরা এটা করতে ব্যর্থ হই, তবে আমরা ভারতের জনগণের প্রতি এবং আমাদের ঘোষিত আদর্শের প্রতি মৌলিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হব। রাষ্ট্রকে অবশ্যই ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ ধারণ করতে হবে। রাষ্ট্র শুধু ধর্মীয় বিষয়ে নিরপেক্ষ থাকবে তা নয়, নিশ্চিত করবে যে, কোন ধর্ম বা ধর্মীয় গোষ্ঠী অন্যের উপর হস্তক্ষেপ না করে। আমাদের মনে রাখতে হবে, রাষ্ট্রের কাজ সব নাগরিকের কল্যাণ নিশ্চিত করা—ধর্মীয় পরিচয় নির্বিশেষে। ধর্ম ব্যক্তিগত বিশ্বাসের বিষয়। রাষ্ট্রের সঙ্গে এর কোন সম্পর্ক নেই। বরং রাষ্ট্র যদি ধর্মে আগ্রহ দেখায়, তবে তা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের অবসান ঘটাবে।”
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন