বিয়ে সম্পর্কে জহরলাল নেহেরুর মন্তব্য :
বিয়ে সম্পর্কে জহরলাল নেহেরুর মন্তব্য :
“বিয়েটা ব্যক্তিগত এবং ঘরোয়া ব্যাপার যা মূলত দুজনের এবং অংশত তাদের পরিবারের চিন্তার বিষয়।”
—জহরলাল নেহেরু
উক্তিটি ইংরেজিতে পড়ুন
উক্তিটির উৎস ও প্রসঙ্গ সম্পর্কে জানুন :
Jawaharlal Nehru's comments on Marriage
Jawaharlal-Nehrus-comments-on-Marriage
১৯৪২ সালের ৬ই মার্চ ইন্দিরা নেহেরু ও ফিরোজ গান্ধীর বিয়ের দিন ঘোষণা করা হয় আনুষ্ঠানিকভাবে। বলা হয়, আগামী ২৬ শে মার্চ ইন্দিরা নেহেরু ও ফিরোজ গান্ধীর বিয়ে হবে আনন্দ ভবনে।
যদিও এই ঘোষণার দুই সপ্তাহ আগে ‘দ্য লিডার’ সংবাদপত্র একটি সংবাদ প্রকাশ করে। সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় জানানো হয়, এক হিন্দু ব্রাহ্মণ কন্যার সঙ্গে এক পারসী যুবকের বিয়ে হতে চলেছে। সেদিন এই সংবাদপত্রটি জানায় কংগ্রেস নেতা জহরলাল নেহেরুর কন্যা ইন্দিরা নেহেরুর সঙ্গে ফিরোজ গান্ধীর এনগেজমেন্ট অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। বলা হয়, ১৯৪২ সালের ২৬ই মার্চ রামনবমীর দিন ইন্দিরা নেহেরু ও ফিরোজ গান্ধীর বিবাহ হবে আনন্দ ভবনে।
খবরটি প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে শুরু হয় বিতর্ক। এই বিতর্কে সূত্র ধরেই এই বিয়ের বিরোধিতা করে চিঠি আসতে থাকে জহরলাল নেহেরু এবং গান্ধীজীর কাছে। এই চিঠিগুলির মধ্যে এমন চিঠি ছিল যেখানে রীতিমতো শাসিয়ে এই বিয়ে বন্ধ করার দাবি করা হয়েছিল।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জহরলাল নেহেরু একটি প্রেস বিবৃতি জারি করেন। এই বিবৃতিতে তিনি বলেন, “আমার কন্যা ইন্দ্রার সঙ্গে ফিরোজ গান্ধীর এনগেজমেন্ট এর কথা একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। এই ব্যাপারে আমার কাছে বহু লোক জানতে চাওয়ায়, ওই রিপোর্টটি সঠিক বলে জানাচ্ছি। বিয়েটা ব্যক্তিগত এবং ঘরোয়া ব্যাপার যা মূলত দুজনের এবং অংশত তাদের পরিবারের চিন্তার বিষয়। তবুও জনগণের সঙ্গে আমার যোগাযোগের কথা ভেবে আমার উচিত বন্ধুবান্ধব, সহকর্মী এবং সাধারণভাবে আমার ওপর যারা আস্থা রাখেন, সেই জনগণকেও এটা জানানো।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গান্ধীজীর কাছে আসা চিঠিগুলোর জবাবে ১৯৪২ সালের ৮ই মার্চ হরিজন পত্রিকার মাধ্যমে গান্ধীজি জানান, “আমি বেশ কিছু খারাপ ভাষায় লেখা চিঠি পেয়েছি এবং তাতে খোলাখুলি ভাবেই ফিরোজের সঙ্গে হিন্দিরার এনগেজমেন্ট এর কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। কিন্তু একটা চিঠিতেও ফিরোজ গান্ধীকে খারাপ লোক বলা হয়নি। তার শুধুমাত্র অপরাধ, সে একজন পারসী। আমি এখনো আগের মতই বিয়ের কারণে কোন একজনের ধর্ম পরিবর্তনের চরম বিরোধী। ধর্ম পোশাকের মতো ইচ্ছামত পরিবর্তন করা যায় না। এই ক্ষেত্রে কোন ধর্ম পরিবর্তনের প্রশ্নই উঠছে না। ফিরোজ দীর্ঘদিন ধরে নেহেরু পরিবারের ঘনিষ্ঠ। সে অসুস্থ কমলা নেহেরুর সেবা শুশ্রূষা করেছে। সে ছিল যেন তার সন্তানের মতো।”
প্রাসঙ্গিক তথ্য পেতে আপনারা দেখতে পারেন, সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়ের লেখা ‘বিয়ের রাজনীতি, রাজনীতির বিয়ে’ নামক নিবন্ধ। লেখাটি প্রকাশিত হয়েছিল, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ রবিবার, ইংরেজি ১১ই মে ২০২৫ সালে ‘এই সময়’ সংবাদপত্রে উত্তর সম্পাদকীয় প্রবন্ধ হিসেবে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন