ধর্ম সম্পর্কে মহাত্মা গান্ধীর মন্তব্য
ধর্ম সম্পর্কে মহাত্মা গান্ধীর মন্তব্য :
“ধর্ম পোশাকের মতো ইচ্ছামত পরিবর্তন করা যায় না।”
— মহাত্মা গান্ধী
উক্তিটি ইংরেজিতে পড়ুন
উক্তিটির উৎস ও প্রসঙ্গ জানুন :
Mahatma Gandhi's comments on Religion
Mahatma-Gandhis-comments-on-Religion
১৯৪২ সালে ‘দ্য লিডার’ নামক একটি সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় একটি খবর প্রকাশিত হয়। খবরে জানানো হয়, এক হিন্দু ব্রাহ্মণ কন্যার সঙ্গে এক পার্সি যুবকের বিয়ে হতে চলেছে। সেইসঙ্গে এও জানানো হয়, কংগ্রেস নেতা জহরলাল নেহেরুর কন্যা ইন্দিরা নেহেরুর সঙ্গে ফিরোজ গান্ধীর এনগেজমেন্ট অনুষ্ঠান হয়েছে। আগামী ২৬ মার্চ রামনবমীর দিন তাঁদের বিবাহ অনুষ্ঠিত হবে আনন্দ ভবনে।
খবরটি প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে শুরু হয় বিতর্ক। এই বিতর্কে সূত্র ধরেই এই বিয়ের বিরোধিতা করে চিঠি আসতে থাকে জহরলাল নেহেরু এবং গান্ধীজীর কাছে। এই চিঠিগুলির মধ্যে এমন কিছু চিঠি ছিল, যেখানে রীতিমতো শাসিয়ে এই বিয়ে বন্ধ করার দাবি করা হয়েছিল।
গান্ধীজীর কাছে আসা চিঠিগুলোর জবাবে ১৯৪২ সালের ৮ই মার্চ হরিজন পত্রিকার মাধ্যমে গান্ধীজি জানান, “আমি বেশ কিছু খারাপ ভাষায় লেখা চিঠি পেয়েছি এবং তাতে খোলাখুলি ভাবেই ফিরোজের সঙ্গে ইন্দিরার এনগেজমেন্ট এর কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। কিন্তু একটা চিঠিতেও ফিরোজ গান্ধীকে খারাপ লোক বলা হয়নি। তার শুধুমাত্র অপরাধ, সে একজন পারসী। আমি এখনো আগের মতই বিয়ের কারণে কোন একজনের ধর্ম পরিবর্তনের চরম বিরোধী। ধর্ম পোশাকের মতো ইচ্ছামত পরিবর্তন করা যায় না। এই ক্ষেত্রে কোন ধর্ম পরিবর্তনের প্রশ্নই উঠছে না। ফিরোজ দীর্ঘদিন ধরে নেহেরু পরিবারের ঘনিষ্ঠ। সে অসুস্থ কমলা নেহেরুর সেবা শুশ্রূষা করেছে। সে ছিল যেন তার সন্তানের মতো।”
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জহরলাল নেহেরুও একটি প্রেস বিবৃতি জারি করেন। এই বিবৃতিতে তিনি বলেন, “আমার কন্যা ইন্দ্রার সঙ্গে ফিরোজ গান্ধীর এনগেজমেন্ট এর কথা একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। এই ব্যাপারে আমার কাছে বহু লোক জানতে চাওয়ায়, ওই রিপোর্টটি সঠিক বলে জানাচ্ছি। বিয়েটা ব্যক্তিগত এবং ঘরোয়া ব্যাপার যা মূলত দুজনের এবং অংশত তাদের পরিবারের চিন্তার বিষয়। তবুও জনগণের সঙ্গে আমার যোগাযোগের কথা ভেবে আমার উচিত বন্ধুবান্ধব, সহকর্মী এবং সাধারণভাবে আমার ওপর যারা আস্থা রাখেন, সেই জনগণকেও এটা জানানো।”
প্রাসঙ্গিক তথ্য পেতে আপনারা দেখতে পারেন, সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়ের লেখা ‘বিয়ের রাজনীতি, রাজনীতির বিয়ে’ নামক নিবন্ধ। লেখাটি প্রকাশিত হয়েছিল, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ রবিবার, ইংরেজি ১১ই মে ২০২৫ সালে ‘এই সময়’ সংবাদপত্রে উত্তর সম্পাদকীয় প্রবন্ধ হিসেবে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন