হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে কেশবচন্দ্র সেন-এর মন্তব্য
হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে কেশবচন্দ্র সেন-এর মন্তব্য :
“হিন্দুধর্মরূপ বৃক্ষের মূল দেশে যদি নিরীক্ষণ করি তাহা হইলে দেখি এক অদ্বিতীয় ঈশ্বর বসে আছেন। কিন্তু বৃক্ষের শাখা গণনা করিয়া দেখি সেখানে তেত্রিশ কোটি দেবতা।”
—কেশব চন্দ্র সেনউক্তিটি ইংরেজিতে পড়ুন
উক্তিটির উৎস ও প্রসঙ্গ জানুন :
গ্রন্থ : ‘সেবকের নিবেদন’,
প্রথম ও দ্বিতীয় খন্ড (একত্রে),
(শ্রীমদাচার্য কেশব চন্দ্র সেনের উপদেশ)
প্রকাশক : বিধান প্রেস, চতুর্থ সংস্করণ,
১৮৩৬ শকাব্দ, ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দ, পৃষ্ঠা নং ১১।
Keshav Chandra Sen's comments on Hinduism
Keshav-Chandra-Sens-comments-on-Hinduism
ব্রহ্মা মন্দিরের বেদী হইতে হিন্দুস্থানের প্রাচীন বিবাদ অদ্য মীমাংসা করিতে হইবে। এই দেশে বহোকাল হইতে একটি প্রকাণ্ড সংগ্রাম চলিতেছে। সেই সংগ্রামের একদিকে পবিত্র ব্রহ্ম ধর্ম, অপরদিকে পৌত্তলিকতা, একদিকে একমেবাদ্বিতীয়ম্ অন্যদিকে বহু দেব-দেবী। এই দুইয়ের মধ্যে যদি সন্ধিস্থাপিত না হয়, তবে অকল্যাণ ও অনিষ্টের সীমা পরিসীমা থাকিবে না। যতদিন এই সংগ্রাম চলিবে, ততদিন রাজ্যের কল্যাণ নাই, সামাজিক কুশল নাই, পারিবারিক মঙ্গল নাই। ঈশ্বর এক কি তেত্রিশ কোটি? হিন্দুধর্মরূপ বৃক্ষের মূল দেশে যদি নিরীক্ষণ করি তাহা হইলে দেখি এক অদ্বিতীয় ঈশ্বর বসিয়ে আছেন। কিন্তু বৃক্ষের শাখা গণনা করিয়া দেখি সেখানে ৩৩ কোটি দেবতা। বাস্তবিক হিন্দু ধর্মের মূল এতে যদিও একেশ্বরবাদ নিহিত, ইহার পৌত্তলিক শাখা প্রশাখা অসংখ্য। একদিকে একমেবাদ্বিতীয়ম্, আর একদিকে দুই নহে, পাঁচ নহে, কিন্তু তেত্রিশ কোটি দেবতা! কিরূপে এদেশে পরস্পর বিরুদ্ধ মত প্রচারিত হইল তাহা সহজে হৃদয়ঙ্গম হয় না। কিন্তু এদের মধ্যে সামঞ্জস্য কি অসম্ভব? এই বিরুদ্ধ মতদ্বয়ের মধ্যে কি কোন প্রকারের সন্ধি হয় না? অদ্য এই গুরুতর বিষয়ের মীমাংসাতে আমরা প্রবৃত্ত হই। আর্য সমাজের আদিতে এক ঈশ্বর পূজা প্রবর্ত্তিত ছিল, কালক্রমে যখন পুরানাদি রচিত হইল, তখন লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি অথবা অসংখ্য দেব-দেবীর অর্চ্চনা আরম্ভ হইল। আদিতে ব্রম্ভ পূজা অন্তে মূর্ত্তি পূজা।
--------xx-------
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন