দেব-অসুর সংঘাত সম্পর্কে দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় এর মন্তব্য
দেব-অসুর সংঘাত সম্পর্কে দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় এর মন্তব্য :
“পুরাণে দেব-সুর সংঘাত মূলত ছিল সংস্কৃতি ও শ্রেণী সংঘাতের প্রতিফলন।”
—দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়,উক্তিটি ইংরেজিতে পড়ুন 
উক্তিটির উৎস ও প্রসঙ্গ জানুন :
দেবিপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, তার ‘লোকায়ত দর্শন’ নামক গ্রন্থে এই মন্তব্যটি করেছেন।
প্রাক আর্য যুগে ভারতীয় সমাজ ছিল কৃষি নির্ভর এবং প্রকৃতি নির্ভর। জীবনযাপন ছিল সাম্যবাদী ভাবধারার অনুসারী। তাদের এই সমাজকে ‘লোকায়ত সমাজ’ নামে চিহ্নিত করা হয়। পরবর্তীকালে যখন আর্যরা আসে এবং ক্ষমতা দখল করে, তখন তারা এই লোকায়ত জনগোষ্ঠীকে অসুর হিসাবে আখ্যায়িত করে। অর্থাৎ অসুর শব্দটি কোন ধর্মীয় অপরাধ নয়, বরং ক্ষমতার ভাষা। বিজয়ী গোষ্ঠী পরাজিতের সংস্কৃতিকে অসুরত্ব বা অসুরের সংস্কৃতি বলে চিহ্নিত করে। এই পরিপ্রেক্ষিতে মহিষাসুরবধ কাহিনীর এক প্রতীকী ইতিহাস যেখানে দেবী আসলে লোকায়ত শক্তির একিকৃত রূপ, আর মহিষাসুর তার প্রাচীন প্রতিদ্বন্দ্বী শ্রেণির প্রতিনিধি।
সুতরাং আজ যদি কেউ অসুরের মুখকে কোন নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মুখে পরিণত করে, তবে তা শুধু রাজনৈতিক নয়, তা এক ধরনের ঐতিহাসিক বিকৃতি। এটা করার অর্থ হল পুরনো শ্রেণিবিভেদে ভাষাকে নতুন রূপে পুনর্জীবিত করা। যা আসলে প্রকৃত পুরান দর্শনের পরিপন্থী।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন