ধর্ম সম্পর্কে রামকৃষ্ণ পরমহংস
ধর্ম সম্পর্কে রামকৃষ্ণ পরমহংসের উক্তি :
“তোমার ধর্ম আমার ধর্ম বলে লড়াই করে কি লাভ? যখন তোমার আমার সবার গন্তব্য সেই একজনেরই কাছে।”
—রামকৃষ্ণ পরমহংসএটি ইংরেজিতে পড়ুন
উক্তিটির উৎস ও প্রসঙ্গ জানুন :
Ramakrishna Paramahamsa's quotes about religionRamakrishna-Paramahamsas-quotes-about-Religion
এই উক্তিটির অর্থ হলো, ধর্ম নিয়ে ঝগড়া করা অর্থহীন। কারণ, সকল মানুষের গন্তব্য একই—ঈশ্বর বা পরম সত্তা। শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসের এই বাণীটি ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে সকলের মধ্যে একতা এবং ঐক্যের বার্তা দেয়।
• ধর্মীয় সংঘাতের বিরোধিতা: উক্তিটি সরাসরি ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলির মধ্যেকার লড়াইকে নিরর্থক বলে অভিহিত করে।
• একতার বার্তা: এটি বোঝায় যে, বিভিন্ন ধর্ম থাকলেও তাদের মূল লক্ষ্য বা গন্তব্য একই, অর্থাৎ ঈশ্বরের কাছে পৌঁছানো।
• সার্বজনীন সত্য: এই বাণীর মাধ্যমে রামকৃষ্ণ পরমহংস এই শিক্ষাও দিয়েছেন যে, সকল মানুষ একই পরম সত্তার অংশ এবং তাদের উদ্দেশ্য এক।
--------xx--------
🗣️ উক্তিটির উৎস ও প্রসঙ্গ
শ্রীরামকৃষ্ণের এই বাণীটি "রামকৃষ্ণ কথামৃত"-এ লিপিবদ্ধ আছে বলে জানা যায়, যা তাঁর প্রধান শিষ্য মঃ মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত (শ্রীম) দ্বারা রচিত। এটি একটি আপ্তবাক্যের মতো, যা তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রসঙ্গে তাঁর শিষ্য ও ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলেছেন।এই উক্তির মূল প্রসঙ্গ হল ধর্মীয় সহিষ্ণুতা ও সকল ধর্মের অন্তর্নিহিত একত্ব প্রতিষ্ঠা করা। ঊনবিংশ শতকের বাংলায় ধর্ম নিয়ে সংকীর্ণতা ও বিরোধের পরিবেশে শ্রীরামকৃষ্ণ সরাসরি অনুভব করেছিলেন যে সকল ধর্মই সত্যের ও ঈশ্বরের দিকে নিয়ে যাওয়ার বিভিন্ন পথ।
· “তোমার ধর্ম আমার ধর্ম বলে লড়াই করে কী লাভ?” – এই অংশটির মাধ্যমে তিনি ধর্মের নামে হওয়া অনাবশ্যক দ্বন্দ্ব ও সংঘাতের অসারতা প্রকাশ করেছেন।
· “যখন তোমার আমার সবার গন্তব্য সেই একজনেরই কাছে” – এখানে তিনি সকল ধর্মানুসারীর চূড়ান্ত লক্ষ্য যে এক ও অভিন্ন পরম সত্তার কাছে পৌঁছানো, সেই সত্যটি নির্দেশ করেছেন।
শ্রীরামকৃষ্ণের সর্বধর্ম-সমন্বয়ের দর্শন
এই একটি বাণী শুধু একটি মন্তব্য নয়, বরং শ্রীরামকৃষ্ণের সমগ্র জীবনদর্শনের সারসংক্ষেপ। তিনি কেবল মতবাদ দিয়েই নন, সরাসরি সাধনার মাধ্যমে বিভিন্ন ধর্মপথ অনুশীলন করে এই সত্য উপলব্ধি করেছিলেন।সমন্বয়বাদী দৃষ্টিভঙ্গির মূলনীতি :
দৃষ্টিভঙ্গির দিক শ্রীরামকৃষ্ণের শিক্ষা ব্যাখ্যাবহু পথ, এক লক্ষ্য "যত মত, তত পথ" ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম হল ভিন্ন ভিন্ন রাস্তা, কিন্তু সবগুলোর গন্তব্য একই ঈশ্বর।
ব্যক্তিনিষ্ঠ সাধনা ধর্ম হল ব্যক্তিগত অনুভূতি ও উপলব্ধির বিষয় প্রতিটি ব্যক্তির জন্য উপযুক্ত পথ ভিন্ন হতে পারে, এটাই স্বাভাবিক।
সহিষ্ণুতা ও শ্রদ্ধা অন্যের ধর্মের "ভাল"-কে অনুধাবন করা অন্যের ধর্মীয় বিশ্বাস ও রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া।
লোকস্থিতি ও শান্তি বিভিন্ন ধর্মের সমন্বয় ছাড়া সামাজিক শান্তি সম্ভব নয় ধর্মীয় কুসংস্কার ও সংঘাত সমাজের স্থিতিশীলতা নষ্ট করে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন